দিনাজপুর হাকিমপুরে ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার লোভে ৪ বছর বয়সী শিশুকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম করার অপরাধে আব্দুস সালাম ওরফে সামিউল নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সামিউলের মা-বাবাকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা জজ শরীফ উদ্দিন আহমেদ এ রায় দেন।
আসামিরা হলেন- যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুস সালাম ওরফে সামিউল, তার বাবা হাকিমপুর উপজেলার মুহাড়াপাড়ার আমজাদ হোসেন, মাতা মোছাঃ ছানোয়ারা বেগম।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল মুহাড়াপাড়ার বাসিন্দা ও হাকিমপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ আজাদের ৪ বছর বয়সী ছেলে আবতাহী আল রশিদকে অপহরণ করে মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। পরে শিশুটির বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সামিউলকে আটক করে।
সামিউল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়- ভারতীয় টিভি সিরিয়াল‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার জন্য শিশু আবতাহীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করেছে। পরে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী- তার ঘরের মাচাং থেকে শিশুটির বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। ঐ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা হাকিমপুর থানায় মামলা করেন। দেড় বছর তদন্তের পর সামিউল ও তার মা-বাবাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। দীর্ঘ বিচারকাজ শেষে আদালত সামিউলকে যাবজ্জীবন ও তার মা-বাবাকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈয়বা বেগম বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করতে পেরেছি। আদালতের রায়ে আমরা খুশি। এ রায়ের ফলে আর কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস পাবে না।